বিজিবি’র অভিযানে এক বছরে সাড়ে ২১ লাখ ইয়াবাসহ ১৪৭ পাচারকারী আটক
বলরাম দাশ অনুপম ॥
কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থান থেকে একের পর এক ইয়াবার চালান আটক হলেও এর পেছনে জড়িত গডফাদাররা প্রতিবারেই থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। আর ইয়াবা পাচারের প্রধান ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার ব্যবহৃত হচ্ছে সীমান্ত শহর টেকনাফের বিভিন্ন পয়েন্ট। বিশেষ করে মিয়ানমারের ৩৭টি কারখানা থেকে টেকনাফের ১১টি পয়েন্ট দিয়ে ইয়াবাগুলো বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। আর সেখান থেকে কোস্টগার্ড, র্যাব, পুলিশ এমনকি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’র চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রতিদিন সড়ক, নৌ ও আকাশপথ দিয়ে এসব ইয়াবা ছড়িয়ে পড়ছে সারাদেশে। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে-বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে মিয়ানমারের ১৫টি স্থানে ৩৭টি ইয়াবা কারখানা রয়েছে। যেখান থেকে সাগর ও সড়কপথে টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ, নয়াপাড়া, সাবরাং, মৌলভীপাড়া, নাজিরপাড়া, জালিয়াপাড়া, নাইট্যংপাড়া, জলিলেরদিয়া, লেদা, আলীখালী, হৃীলাসহ অন্তত ১১টি পয়েন্ট দিয়ে ইয়াবার চালান বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এসব ইয়াবা তৈরি ও পাচারে আন্তর্জাতিক মাদক ব্যবসায়ী যেমন জড়িত রয়েছে তেমনি বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের গডফাদারও রয়েছে। যারা সীমান্তে আইন শৃংখলা রক্ষায় নিয়োজিত বিজিবি, কোস্টগার্ড, র্যাব কিংবা পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে ইয়াবা পাচার করে আসছে। এর মাঝেও হাল ছাড়েননি আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। জানা গেছে-২০১৩ সালের ১ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ১ নভেম্বর পর্যন্ত বিজিবির সদস্যরা ২১ লাখ ৫০ হাজার ইয়াবাসহ ১৪৭ জন পাচারকারীকে আটক করেছে। তাছাড়া সর্বশেষ ২৯ নভেম্বর কক্সবাজার শহরের টেকপাড়াস্থ মাঝির ঘাট থেকে ৩০ হাজার ইয়াবাসহ ৫ জনকে আটক করে র্যাব। এর আগে ৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় সমুদ্র সৈকতের কলাতলী পয়েন্ট থেকে ১ লাখ ইয়াবাসহ ৭ জনকে আটক করেছিল র্যাব। তবে অভিযোগ উঠেছে বড় বড় ইয়াবার চালান আটক হলেও বরাবরের মতই এর সাথে জড়িত গডফাদাররা থেকে যাচ্ছে আড়ালে। তবে গত কয়েকমাস আগে বেশ কয়েকটি বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী জাহেদ হোসেন জাকু, ফরিদ আলম ও নূর মোহাম্মদসহ ৬ জন নিহত এবং প্রায় ২০ জনের মত হাত-পা হারিয়ে পঙ্গু হওয়ায় বেশ কিছুদিন আত্মগোপনে ছিল ইয়াবা ব্যবসায়ী ও গডফাদাররা। কিন্তু বর্তমানে গডফাদাররা আড়ালে থেকে পুনরায় নিয়ন্ত্রণ করা শুরু করেছে এ ব্যবসা এমন অভিযোগ উঠেছে। তবে সড়ক ও নৌ পথে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কঠোর নজরদারির কারণে আকাশপথকে বেছে নিয়ে ইয়াবা পাচার চালিয়ে যাচ্ছে তারা। এমনি ভাবে গত ২৪ নভেম্বর বিমানে করে পাচারকালে ২০ হাজার ইয়াবাসহ ৬ জনকে আটক করে ডিবি পুলিশ। টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোক্তার হোসেন বলেন, গত নয় মাসে পুলিশ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এক লাখ ৬৮ হাজার ইয়াবাসহ ১৪৫ পাচারকারীকে আটক করলেও ইয়াবা পাচার ঠেকানো যাচ্ছে না। টেকনাফস্থ ৪২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. আবুজার আল জাহিদ বলেন, চলতি বছরের গত মার্চে বিজিবি, র্যাব, পুলিশ টেকনাফে ইয়াবাবিরোধী যৌথ অভিযান চালিয়ে কয়েক লাখ ইয়াবা উদ্ধার করে।
প্রকাশিত: ০৮/১২/২০১৪ ৩:২১ অপরাহ্ণ
পাঠকের মতামত